Mangolic

মাঙ্গলিক যোগ -দাম্পত্য কলহ- বিচ্ছেদ

স্বামী-স্ত্রী বনিবনার অভাব আজকাল অতি সাধারণ ঘটনা। ছোট খাটো কারণ নিয়ে শুরু হয়ে যায় তুমুল অশান্তি। এই যান্ত্রিক যুগে মানুষ এতটাই ব্যস্ত বা বলা চলে এতটাই চাপে থাকে যে অন্যের সুপরামর্শও তার কাছে বাসের হর্নের মতো অস্বস্তিকর মনে হয়।

তবে সবসময় যে শুধু মাত্র এই সামান্য কারণে অশান্তি শুরু হয় তা নয়। এর পিছনে আরো অনেক কারণ থাকতে পাবে। যেমন-

(১) তৃতীয় ব্যক্তির উপস্থিতি

(২) আর্থিক সংকট

(৩) শ্বশুর-শাশুড়ির সাথে

মতের অমিল

(৪) নেশায় আসক্ত

(৫) বাপের বাড়ির অনুপ্রবেশ ইত্যাদি।

কারণ যাই হোক, সমস্যা একটাই-দাম্পত্য কলহ বা বিচ্ছেদ। সাধারণত এই ধরনের সমস্যা আসে মঙ্গল ও শুক্র থেকে। কারণ ছেলেদের বিবাহ কারক গ্রহ মঙ্গল ও মেয়েদের বিবাহ কারক গ্রহ শুক্র। সপ্তমপতি বা সপ্তমভাব বিবাহের স্থান।

লগ্ন, চতুর্থ, সপ্তম, অষ্টম ও
দ্বাদশ এই সকল স্থানে মঙ্গলের

অবস্থান ভৌম দোষ সৃষ্টি করে। এই মাঙ্গলিক দোষ থাকলে জাতক জাতিকার বিবাহ বিচ্ছেদ এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। বিবাহিত জীবনে শনিকেও বিশেষ অমঙ্গলকারী গ্রহ হিসাবে গণ্য করা হয়।

কোনও কোনও বিশেষ স্থিতি অনুযায়ী এই দোষ নষ্ট হয়ে যায়। অনাথা বিশেষ উপায়ে এই দোষ খণ্ডন করা যায়।কোনও জাতক বা জাতিকার জন্ম কুণ্ডলীতে লগ্ন, চতুর্থ, সপ্তম, অষ্টম ও দ্বাদশে মঙ্গল অবস্থান করলে মাঙ্গলিক দোষ হয়ে থাকে। যদি বর ও বধুর মঙ্গল সমান সমান অবস্থান করে থাকে লগ্ন, ৪র্থ, ৭ম, ৮ম ও ১২শ ভাবে তাহলে এই দোষ খণ্ডন হয়। এছাড়া যদি শনি সমান ভাবে অবস্থান করে তাহলে মঙ্গল অমঙ্গলকারী হয় না। শনির দৃষ্টি মঙ্গলের উপর পড়লেও এই কুপ্রভাব নষ্ট হয়। চতুর্থ আর সপ্তম ভাবে মঙ্গল মেষ, কর্কট, বৃশ্চিক ও মকরে অবস্থান করলে এবং এর উপর যদি কোনও ক্রুর গ্রহের দৃষ্টি না পড়ে তবে এর দোষ কিছু কম হয়ে থাকে।

কোনও পুরুষের কুণ্ডলীতে মাঙ্গলিক দোষ থাকলে তার কর্মজীবনে উন্নতি করতে খুব অসুবিধা হয়। আবার কোনও নারীর কোষ্ঠীতে এই দোষ থাকলে সে খুব বুদ্ধিমতী ও লড়াকু মানসিকতার হয়ে থাকে।

এছাড়া রবি শনি রাহু মঙ্গল ও কেতু যদি সপ্তমপতি দৃষ্ট যুক্ত বা আক্রান্ত হয় বা ভাবপতির সাথে কোনও রকম সম্পর্ক সৃষ্টি করে তাহলেও এই ধরনের সমস্যা আসতে পারে। এই সকল অশুভ গ্রহগুলি যদি দশা বা অন্তর্দশার মধ্যে আসে তাহলেও সাময়িক ভাবে এই ধরনের সমস্যা আসতে পারে।

আগেই বলেছি, সনাতন জ্যোতিষ মতে ভৌম দোষ বা মাঙ্গলিক দোষ কিংবা মঙ্গলের প্রভাব বিবাহিত জীবনকে সমস্যাসঙ্কুল করে ফেলতে পারে।

বিয়ের পাত্র বা পাত্রীর মধ্যে যে কোনও একজনের ভৌম দোষ থাকলে বিয়ের আগে তা প্রতিকারের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরী। স্বামী বা স্ত্রীর মধ্যে একজন মাঙ্গলিক হলে আরেকজনের স্বাস্থ্য হানি, সম্পত্তি হানি এমনকি জীবন হানির পর্যন্ত আশঙ্কা থাকে। এছাড়া সম্পর্কে অবনতি থেকে ডিভোর্স | হওয়াও বিচিত্র নয়।মঙ্গলের প্রভাবের ফলে আর যেসব সমস্যা হতে পারে, তা হল-

• আগাপিছু না ভেবে এমন কাজ করা, যার জন্য পরে অনুশোচনা হবে।

• প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারা। 

• নির্দিষ্ট কোনও কারণ ছাড়াই সমস্যা।

• যৌন অক্ষমতা।

• ভাইয়ের সঙ্গে গুরুতর মনোমালিন্য।

• দুর্ঘটনা ও রক্তপাত এবং রক্তজনিত অসুখ।

• সম্পত্তিহানি।

শনির সাড়েসাতি চলাকালীন প্রচন্ড মানসিক অশান্তি ও দাম্পত্য কলহ হতে দেখা যায়।

কালসর্প যোগ থাকলেও এই একই ধরনের সমস্যা আসতে পারে। সমস্যা যাই হোক সমাধানের জন্য প্রয়োজন শাস্ত্রীয় বিধান অনুযায়ী সম্পূর্ণ বৈদিক বা তান্ত্রিক মতে মঙ্গল গ্রহের ও বগলামুখী দেবীর পূজার্চনা মন্ত্র জপ ও কবচ্ ধারণ।

বগলামুখী মন্ত্র-ওম্ হ্রীং বগলামুখি সর্বদুষ্টানাম্ বাচম্ মুখম্ পদম্ স্তন্তয় জিহ্বাম কীলয় কীলয় বুদ্ধিম্ বিনাশায় হ্রীং ওম স্বাহা।

উপরোক্ত মন্ত্র ১০৮ বার জপ করলে সব রকম বাধা বিঘ্ন দূর হয়, শত্রু মিত্র হয়ে যায়, মামলা- মোকদ্দমাতে জয় লাভ হয়, শুধু বাইরের শত্রু নয় আমাদের ভিতরের ক্ষতিকারক প্রবৃত্তিগুলো (হিংসা, বিদ্বেষ, লোভ, লালসা, রাগ ও দুঃখ) নষ্ট হয়।

Comments

Popular posts from this blog

রাশি অনুসারে নাম

আপনার রাশিফল

রবির কাজ